খাবারে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দিশেহারা অবস্থা। আবার সঠিকভাবে শরীরচর্চা না করায় ওজন বেশি বেড়ে যায়। অনেক সময় এই ওজন দ্রুত কমানোর প্রয়োজন পড়ে নানা কারণে। তখন অনেকে ওজন বিভিন্নভাবে কমানোর পথ খোঁজেন।
সাত দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজন কমানো সম্ভব। নিয়মমতো খাওয়াদাওয়া এবং কিছু ব্যায়াম করলে ওজন কমানো যায়। তবে ওজন কমানোর এই প্রক্রিয়া দীর্ঘমেয়াদি না হওয়াই উচিত। যদি করতেই হয়, তাহলে অবশ্যই কোনো পুষ্টিবিদের পরামর্শে করা উচিত। নয়তো এর ফলে শরীরে নানা রকম সমস্যা দেখা দিতে পারে।
সাত দিনে তিন থেকে সাড়ে তিন কেজি ওজন কমানোর জন্য যা করতে পারেন:
১. প্রতি তিন ঘণ্টা পরপর তরল বা নরম খাবার খেতে হবে।
২. রাতে প্রতিদিন ছয় ঘণ্টা ঘুমাতে হবে এবং খুব সকালে উঠেই সকালের খাবার সেরে ফেলতে হবে।
৩. প্রতি বেলায় যে খাবারটি খাওয়া হবে, অবশ্যই তা ২০০ গ্রামের মধ্যে হতে হবে এবং খাবার অবশ্যই উচ্চ প্রোটিনযুক্ত অ্যান্টি-অক্সিডেনটসমৃদ্ধ হতে হবে। এ ছাড়া দিনের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে পানি খেতে হবে, তবে অবশ্যই সেটা ঠান্ডা পানি হওয়া যাবে না।
৪. প্রোটিনের ক্ষেত্রে ডিমের সাদা অংশ, সেদ্ধ মুরগি অথবা রান্না সু৵প খেতে হবে। সামান্য তেল দিয়ে রান্না করতে হবে। শর্করার ক্ষেত্রে গম, আটার খাবার, সেদ্ধ নুডলস এবং লাউ-পেঁপে ইত্যাদি সেদ্ধ অথবা সু৵প করে খেতে হবে। সঙ্গে সালাদ খেতে ভুলবেন না।
৫. ডুবো তেলে ভাজা, অতিরিক্ত ফ্যাটসমৃদ্ধ এবং মিষ্টিজাতীয় খাবার, কোমল পানীয় অবশ্যই বাদ দিতে হবে। দুধের পরিবর্তে টকদই অথবা দুধের সর বাদে তৈরি খাবার খেতে হবে।
খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত ব্যায়ামও করতে হবে। ওজন অনুযায়ী ব্যায়াম করতে হবে। প্রতিদিন এক ঘণ্টা খুব দ্রুত হাঁটতে হবে। কারও যদি শরীরের কোনো নির্দিষ্ট জায়গার ফ্যাট বেশি থাকে, তাহলে সে জায়গাগুলোর ব্যায়াম করতে হবে।
কোনো ব্যক্তি কতটুকু খাবার খাবেন, তা তাঁর উচ্চতা, বয়স, ওজন ও পরিশ্রমের ওপর নির্ভর করবে। বিশেষজ্ঞরা এ বিষয়ে পরামর্শ দিতে পারবেন।
যেসব পানীয়, খাবার, ফল এবং ব্যয়াম ওজন কমায়
আমরা সকলেই সুন্দর হতে চাই, সুস্থ থাকতে চাই। কিন্তু নিত্য নিয়ম, সময়ের স্বল্পতা, আমাদের আলস্য, অনীহা সব মিলিয়ে নিজের পরিচর্যা করাটা সব সময় হয়ে উঠে না। কিন্তু নিজেকে ফিট রাখাটা একান্ত জরুরি। বাড়তি ওজন শুধু আপনার দৈহিক সৌন্দর্যকেই নষ্ট করে না বরং বিভিন্ন রোগের আশঙ্কাকেও বাড়িয়ে দেয়। অন্যদিকে নিজের মতো করে নিজেকে উপস্থাপন করাটাও একটি শৈল্পিক বিষয়। তাই নিজেকে সুন্দর রাখতে সব সময়ই দরকার নিজের ওজনকে নিয়ন্ত্রণে রাখা। এ নিয়ে আমাদের এবারের আয়োজন।
যেসব পানীয় ওজন কমায়
ওজন নিয়ে আমরা সবাই কমবেশি দুশ্চিন্তা করি। ওজন কমাতে বা ওজন ঠিক রাখতে হরহামেশাই আমাদের কোনো না কোনো চেষ্টা থাকে। নিয়মিত শরীরচর্চা, খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন ইত্যাদি মেনে চলছি। কিন্তু আমরা অনেকেই জানি না এগুলো ছাড়াও শরীরের ওজন কমাতে সহায়তা করে কিছু পানীয়। এ ব্যাপারে পুষ্টিবিদ আখতারুন্নাহার আলো বলেন, ক্ষুধা কমানোর ক্ষেত্রে চা-কফি এগুলো খুবই কার্যকর ভূমিকা পালন করে। যেমন—একজন ব্যক্তি যদি দিনে অনেকবার গ্রিন টি বা কফি পান করেন, তাহলে তাঁর ক্ষুধা কম পাবে, সে ক্ষেত্রে এই পানীয় ওজন কমাতে সাহায্য করে। আবার অনেক সময় আমরা অবসরে বিভিন্ন নাশতা-জাতীয় খাবার খাই, কিন্তু সেসবের পরিবর্তে যদি সবজির স্যুপ খাওয়া যায়, তাহলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
গ্রিন টি: দিনে তিন থেকে পাঁচ কাপ গ্রিন টি পান করলে শরীর থেকে ৩৫-৪০ শতাংশ মেদ ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
কালো কফি: কালো বা ব্ল্যাক কফিতে যেহেতু কোনো দুধ-চিনি থাকে না। কাজেই এটি দিনে দুই-তিনবার পান করার ফলে তা শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে।
দইয়ের স্মুদি: একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, দই যদি খাদ্যাভ্যাসে রাখা যায়, তবে তা ৬১ শতাংশ মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
করলার জুস: যদিও এটা অনেকেই পছন্দ করেন না এবং শুনতে অরুচিকর মনে হতে পারে। এর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর সম্পূর্ণরূপে দূষণ দূর করে। হজমক্রিয়া উন্নত করে।
সবজির জুস: খাওয়ার আগে যদি এক গ্লাস সবজির জুস পান করা যায়, তবে তা ওজন কমাতে অনেক ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
পাস্তুরিত দুধ বা স্কিমড মিল্ক: এতে কোনো রকম ক্যালরি থাকে না। ফলে তা খাওয়ার ফলে শরীরের মেদ ঝরে যায়।
ডাবের পানি: অনেক সময় দেখা যায় আমরা ক্লান্তি কাটাতে কোমল পানীয় পান করি। এগুলো শরীরের ওজন বাড়ায়। এসেবর বদলে ডাবের পানি পান করা যেতে পারে।
দারুচিনি ও মধুর মিশ্রণ: দারুচিনি ও মধুর মিশ্রণ একসঙ্গে করে গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে তা মেদ ঝরাতে সাহায্য করে।
আদা ও লেবু: আদা ও লেবুর রস একটি গ্লাসে পানির সঙ্গে মিশিয়ে পান করলে তা ওজন কমাতে সাহায্য করে। এসব পানীয় সাধারণত শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে। নিয়মমতো এগুলো পান করলে শরীরের ওজন কমানো সম্ভব।
যা খেলে ওজন কমবে
অনেক খাবেন কিন্তু ওজন বাড়বে না, এমন খাবার আবার আছে নাকি? সব সময় ক্যালরি মেপে খেতে কার ভালো লাগে। তাই এবার ডায়েট তালিকায় যুক্ত করে নিতে পারেন তেমনই কিছু খাবার।
মাছ: ওজন কমানোর জন্য পুষ্টিবিদেরা বেশির ভাগ সময় মাছ খেতে পরামর্শ দেন। তৈলাক্ত মাছের মধ্যে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড থাকে, যা ওজন কমাতে সাহায্য করে। ৪৪ জন মানুষকে নিয়ে ছয় সপ্তাহের এক গবেষণা করা হয়। সেখানে অন্যদের তুলনায় বেশি মাছ খাওয়া মানুষেরা আধা কেজি ওজন কমিয়েছে অন্য কিছু করা ছাড়াই। তা ছাড়া মাছ আমিষের ভালো উৎস, যা হাড়ের ক্ষয় কমাতে সাহায্য করে। এমনটা বললেন পুষ্টিবিদ শামসুন্নাহার নাহিদ।
ডিম: ডিম একটি উচ্চ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার, যা ক্ষুধা হ্রাস করতে সাহায্য করে। ডিম চর্বি কমায়। হৃদ্রোগের জন্যও ডিম ভালো খাবার। শুধু ডিম খেয়েও ক্রাশ ডায়েট করা যায়। তবে এসব ডায়েট করার আগে বিশেষজ্ঞের সঙ্গে অবশ্যই কথা বলে নেবেন।
আমিষ: অনেকেরই ধারণা, ডায়েট মানেই সব ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। যার প্রথমে সবাই শর্করা বাদ দেয়। এরপরই আমিষ। অথচ আমিষের অভাবে চেহারায় বয়সের ছাপ পড়ে, চামড়া ঝুলে যায়, চুল পড়ে। সবচেয়ে মজার তথ্য, পর্যাপ্ত পরিমাণ আমিষ গ্রহণে ওজন কমতে পারে।
মুরগির মাংস থেকে পাওয়া প্রোটিন পেশি বৃদ্ধি করে, ক্ষুধা কমায়, পূর্ণতা বৃদ্ধি এবং অন্যান্য যেসব প্রোটিন উৎস আছে যেমন গরুর মাংস, খাসির মাংস থেকে অনেক বেশি নিরাপদ।
আপেল সিডার ভিনেগার: আপেল সিডার ভিনেগার ক্ষুধা কমাতে সাহায্য করে। পেটের মেদ কমাতে এবং রক্তে ইনসুলিনের পরিমাণ কমাতে সাহায্য করে।
তাহলে আজ থেকেই এ ধরনের খাবার যোগ হোক। আর আপনার খাবারের তালিকায় বাদ যাক তেল মসলাযুক্ত ভারী খাবার।
ওজন কমাতে সহায়ক যেসব ফল
শরীরের ওজন কমাতে কতজন কতকিছুই না করে থাকেন। শরীরের বাড়তি মেদ কমাতে কেউ কেউ খাওয়া-দাওয়াই কমিয়ে দিয়েছেন। মেনে চলছেন অনেক বিধি-নিষেধ। তারপরও কমছে না ওজন। তবে প্রতিদিনের খাবার সম্পর্কে একটু সচেতন থাকলেই শরীরে বাড়তি মেদ জমবে না। দ্রুত শরীরের ওজন কমাতে ফলের বিকল্প নেই। নিচে ওজন কমাতে সহায়ক ৭টি ফল নিয়ে আলোচনা করা হলো:
আপেল: আপেলের পেকটিন ফাইবার পেট ভরানোর পাশাপাশি দেহে মেদের পরিমাণও কমাবে। ভারী খাবার খাওয়ার আগে আপেল খাওয়া তাই উপকারী।
তরমুজ: তরমুজ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ওজন ঝরাতে সাহায্য করে। দিনে একটা তরমুজ খিদে কমিয়ে দেওয়ার সঙ্গে মেদ জমতেও দেবে না।
লেবু: লেবুতে আছে ভিটামিন সি ও সাইট্রিক অ্যাসিড। যা ওবেসিটির পরিমাণ কমায়।
নারকেল: নারকেল যকৃতের বিপাক হার বাড়িয়ে রক্তে শর্করার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে। ফলে প্রকারান্তরে নিয়ন্ত্রণে থাকে ওজন।
বেদানা: বেদানা দেহে লো ডেনসিটি লাইপোপ্রোটিনের হার কমায়। খিদের হার কমায়।
পেঁপে: পেঁপে রক্তে শর্করার পরিমাণ কমিয়ে দেয়। রক্তে শর্করা ওবেসিটির লক্ষণ।
কমলালেবু: কমলালেবুতে প্রচুর পরিমাণে পানি, ভিটামিন ও ফাইবার থাকে। কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে। ফলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
ওজন কমাতে ব্যায়াম
শরীর থেকে বাড়তি ওজন ঝরিয়ে ফেলতে কত কষ্টই না করছি আমরা। মাসের পর মাস লোভনীয় সব খাবার সামনে থাকলেও তা থেকে চোখ ফিরিয়ে নিতে হচ্ছে। তার পরও অনেক সময় পাওয়া যাচ্ছে না কাঙ্ক্ষিত ফল। অথচ কিছু যোগ ব্যায়ামে সহজেই বাড়তি মেদ ঝেড়ে ফেলা যায়। ১২টি আসন নিয়ে এ ব্যায়াম। এটি যে কেউ করতে পারে। পুরুষ বা মহিলা, স্বাস্থ্যবান বা দুর্বল স্বাস্থ্যের অধিকারীরাও। প্রথম দিনে সর্বোচ্চ তিনটি প্রক্রিয়া অনুশীলন করা যেতে পারে। শুরুতে অবশ্য কঠিন কোনো ব্যায়ামে যাওয়া যাবে না। হালকা কিছু ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে হবে, যাতে ১২টি প্রক্রিয়ার জন্য শরীর তৈরি হয়ে যায়, যাকে আমরা ওয়ার্ম আপও বলতে পারি।
ঘাড় : ঘাড় ডান দিকে ঘোরানোর সময় শ্বাস নিতে হবে এবং আগের অবস্থানে ফেরার সময়ে শ্বাস ছেড়ে দিতে হবে। এবার বাঁ দিকে ঘাড় ঘোরানোর সময় শ্বাস নিতে হবে এবং সোজা হওয়ার সময় শ্বাস ছাড়তে হবে। এভাবে তিনবার করার পর ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে সেভাবে ঘাড় ঘোরানোর পর উল্টোভাবেও ঘাড় ঘোরাতে হবে।
হাত ও কাঁধ : বুকের ঠিক সামনে দুই হাত সোজাভাবে প্রসারিত করে হাতের তালু ওপরে-নিচে করতে হবে। এরপর দুই হাতের তালু ডান বাম করে ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে সেদিকে তালু ঘোরানোর পর উল্টোভাবেও ঘোরাতে হবে।
হাঁটু : সামনের দিকে ঝুঁকে হাঁটুতে হাত রাখতে হবে। এখন দুই হাঁটু পাশাপাশি রেখে সামনে-পেছনে করার পর ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘোরে সেভাবে কয়েকবার ঘোরানোর পর উল্টোভাবে কয়েকবার ঘোরাতে হবে।
পেট ও পিঠ : বুকের সামনে রেখে দুই হাতের আঙুল একে অপরের সঙ্গে আঁকড়ে ধরে ধীরে ধীরে হাত ওপরের দিকে ওঠাতে হবে। এ সময়ে শ্বাস নিতে হবে এবং আস্তে আস্তে শুধু পায়ের আঙুলের ওপর দাঁড়াতে হবে। আবার আগের অবস্থানে ফিরে আসতে হবে এবং এটি কয়েকবার করতে হবে।
পা ও কোমর : দাঁড়ানোর মতো অবস্থায় দুই পা সোজা করে রেখে ডান হাতে বাঁ পায়ের বুড়ো আঙুল স্পর্শ করতে হবে। এবার বাঁ হাতে ডান পায়ের আঙুল স্পর্শ করতে হবে। এভাবে কয়েকবার করতে হবে। তবে মনে রাখতে হবে, এটি করার সময় হাঁটু সোজা রাখতে হবে। ওয়ার্ম আপ শেষে আমরা পর্যায়ক্রমে শুরু করব ১২ আসনের প্রক্রিয়া।
১. জাম্পিং জ্যাক বা jumping jack: সচরাচর যে কোনো ধরনের খেলা বা শারীরিক ব্যায়াম করার আগে ওয়ার্ম আপ করে নিতে হয়। আর একটি বিশেষ ধরনের ওয়ার্ম আপ হল এই জাম্পিং জ্যাক। কেননা এর ফলে হৃদস্পন্দন বৃদ্ধি পায়, রক্ত চলাচল স্বাভাবিক থাকে এবং পেশী ঠিক রাখতে সহায়তা করে। জাম্পিং জ্যাকের এই শারীরিক কসরতে দেহের সব পেশীই সক্রিয় থাকে। এই ওয়ার্মআপটি করে আপনি মাত্র ২০ মিনিটে ৩০০ ক্যালরি পর্যন্ত কমিয়ে আনতে পারবেন।
যেভাবে করবেন : জাম্পিং জ্যাক ব্যায়ামটি করা অত্যন্ত সহজ। এর জন্য আমরা ছোটবেলায় যেমনটা স্কুলের পিটিতে আরামে দাঁড়ানো এবং সোজা হওয়ার পিটি করেছিলাম। এটি অনেকটা এরকমই। অর্থাৎ এর জন্য আপনাকে সোজা হয়ে দাঁড়িয়ে এরপরে পা ফাঁক করে হাত উপরে তুলতে হবে। আবার স্বাভাবিক হতে হবে। এভাবে দ্রুত করলে আপনার শরীরের মেদ কমে যাবে।
বারপীস বা burpees : এটি এমন এক ধরনের ব্যায়াম যা মূলত পেশীর শক্তি বৃদ্ধি এবং ফ্যাট কমাতে সহায়তা করে। এই ব্যায়ামটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে খেলোয়াড় বা মিলিটারি ব্যক্তিরা করে থাকেন। ব্যায়ামটিকে বুকের পেশী, বাহুর পেশী, পেটের পেশী, উরুর পেশীসহ ইত্যাদি পেশীগুলো সক্রিয় অবস্থায় থাকে। এটি রক্তচাপ এবং হৃদস্পন্দন বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করে। এই সূক্ষ্ম ব্যায়ামটি করে আপনি মাত্র ১০ মিনিটে ৫০০ ক্যালরি ধ্বংস করতে পারেন।
যেভাবে করবেন : এর জন্য আপনি উপরের ভিডিওটি দেখে নিতে পারেন। এই ব্যায়ামটি করার জন্য প্রথমে উপুড় হয়ে মাটি ছুঁয়ে আবার সোজা হয়ে দাঁড়ান। এরপরে হাত দিয়ে মাটিতে ভর দিয়ে পা পিছনে ছড়িয়ে দিন। দ্রুত এই ব্যায়ামটি করলে পেটের মাঝে চাপ পড়বে এবং শরীরের মেদ ঝরে যাবে।
জ্যাকনাইফ ক্রুনচেস বা Jacknife crunches: পেটের মেদ কমাতে সবচেয়ে বেশি কার্যকরী ভূমিকা রাখে এই ব্যায়ামটি। এটি আপনার পেটটিকে বেশ আকর্ষণীয় করে তুলতে সহায়ক। এই ব্যায়ামটি করে আপনি মাত্র ২০ মিনিটে ২০০ ক্যলোরির মত কমিয়ে আনতে পারবেন।
যেভাবে করবেন : এই ব্যায়ামটি করাও অনেক সহজ। উপরের ভিডিওটি দেখলে দেখবেন এই ব্যায়াম করার জন্য নৌকাসনে শুয়ে বারবার পা এবং হাত মিলানোর চেষ্টা করুন। এতে আশানুরুপ ফল পাবেন। উপরের ৩ টি ব্যায়ামই যদি প্রতিদিন ১ ঘণ্টা করে করতে পারেন তাহলে আপনি দিনে কমপক্ষে ১০০০ ক্যালোরি আপনার দেহ থেকে ধ্বংস করতে পারবেন। যার ওজন যত বেশী, তার ক্যালোরি ক্ষয়ও হবে তত বেশি। ২০ দিনে ৫ থেকে ১০ কেজি ওজন ঝরানো সম্ভব।
সতর্কতা : তবে যেকোনো ধরনের শারীরিক ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন কারণ আগে যাচাই করে নেয়া উচিৎ ব্যায়ামগুলো করার ক্ষেত্রে আপনি শারীরিকভাবে ফিট কিনা। এছাড়া প্রতিটি ব্যায়াম শেষে ৫-১০ মিনিট করে বিশ্রাম নিন।
কমেন্টস করুন