আমরা সবসময় এ প্রশ্নটি মুখোমুখি হই – ব্যায়ামের জন্য দিনের বেলা বেশি ভালো নাকি রাত? উত্তর হলো- আপনার সুবিধা মত! আপনার জীবনধারা এবং সময়সূচী নির্ধারণ করবে আপনার জন্য উপযুক্ত সময় কোনটি, তবে উভয় ক্ষেত্রেই স্বতন্ত্র সুবিধা আছে।
জেনে নিন ব্যায়াম করার সঠিক সময়
স্বাস্থ্য নিয়ে ভাবনা কম বেশি সবাই ভাবেন। তাই হাজার ব্যস্ততার মাঝেও অনেকেই চেষ্টা করে থাকেন কিছুটা সময় ব্যায়ামের জন্য রাখতে। সুস্থভাবে বাঁচার জন্য নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত। শরীর ফিট রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম একটি ভালো অভ্যাস। ব্যায়ামেরও রয়েছে কিছু নিয়মকানুন, কিন্তু আমরা অনেকেই সেগুলো ঠিকভাবে জানি না। আবার জানলেও তা মানি না।
কিন্তু নিজেকে সুস্থ ও স্বাভাবিক রাখতে হলে ব্যায়াম করার নিয়মগুলো ভালোভাবে জানতে হবে এবং মেনে চলারও চেষ্টা করতে হবে। ব্যায়ামের সময় ও ধরনের ওপর ভিত্তি করে তৈরি করতে হবে ফিটনেট প্ল্যানিং ও খাবার তালিকা। কারণ ব্যায়ামের সময়ের সাথে খাওয়ার সঠিক ভারসাম্য না থাকলে সুফল পাওয়া কষ্টকর হয়ে যায়।
আপনি আপনার সুবিধা অনুযায়ী দিনের তিনটা ভাগ হতে একটা নির্দিষ্ট সময়কে ব্যায়ামের জন্য বেছে নিতে পারেন। আসুন দেখে নেই, কোন সময় কী ধরনের ব্যায়ামের জন্য উপযোগী।
ভোর বেলা: ব্যায়াম করার সময়ে শরীরে যথেষ্ট পজিটিভ এনার্জি থাকতে হয় এবং মনঃসংযোগ করতে হয়। তাই ভোর বেলা ঘুম থেকে উঠেই ব্যায়াম করা ঠিক নয়। ঘুম থেকে ওঠার পর শরীরকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অন্তত ৩ ঘণ্টা সময় দিন।
সময়ের অভাবে ঘুম থেকে ওঠার আধা ঘণ্টার মধ্যে শরীরচর্চা করতে হলে হালকা জগিং করে শরীরকে ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত করে নিলে ভাল ফল পাওয়া যায়। ভোর বেলা ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সঠিকভাবে ওয়ার্ম আপ করা অনেক গুরুত্বপূর্ণ।
এ ব্যাপারে কৌতূহল বা জানার কিছু থাকলে ফিটনেস এক্সপার্টের সঙ্গে আলোচনা করে নিন। আর অবশ্যই ভোর বেলা এক্সারসাইজ করার পরিকল্পনা থাকলে আগের দিন অবশ্যই সঠিক সময়ে ঘুমাতে যান, কারণ পর্যাপ্ত ঘুম আপনার শরীরের জন্যই দরকার।
দিনের বেলা: ঘুম থেকে ওঠার পরবর্তী ৬ ঘণ্টা থেকে ১২ ঘণ্টার মাঝামাঝি সময়টি ব্যায়ামের জন্য সবচেয়ে বেশি উপযুক্ত। আপনি সকাল ৭টায় ঘুম থেকে উঠলে বেলা ১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে যেকোনো সময় ব্যায়াম করতে পারেন।
প্রতিদিন দুই ঘণ্টা বা তারও বেশি সময় ভারি ব্যায়াম করার পরিকল্পনা থাকলে অবশ্যই দিনের বেলার কোনো সময় বেছে নিন। দুপুরের খাবারের পর ব্যায়াম করলে ঠিক কতক্ষণ পর করবেন তা অবশ্যই ফিটনেস এক্সপার্টের সাথে কথা বলে ঠিক করে নিন।
সন্ধ্যা বেলা: কাজ থেকে ফিরে সন্ধ্যা বেলা ব্যায়াম করতে পারেন। আর ব্যায়ামের শুরুতে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিন, যাতে শরীরচর্চা করার সময় আপনার শরীরে কোনো রকম ক্লান্তিভাব না থাকে। সন্ধ্যা বেলা শরীরচর্চার ক্ষেত্রে যোগব্যায়াম বেশি উপযুক্ত। এ ছাড়া ট্রেডমিল, সাইক্লিং বা টুইস্টিং ধরনের ব্যায়াম করতে পারেন। ব্যায়াম শেষে অন্তত ১৫ মিনিট মেডিটেশন করুন।
আর একটা ব্যাপার সব সময় মাথায় রাখবেন, ব্যায়াম করার পর পরই শরীরের তাপমাত্রা এবং হরমোনের ক্ষরণ বেড়ে যায়। এতে শরীরের উষ্ণতা বাড়ে এবং শান্তভাব চলে যায়। তাই ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে কখনোই ব্যায়াম করা ঠিক নয়।
টিপস
১. ব্যায়াম করার আগে বা পরপরই বেশি পরিমাণে পানি খাওয়া ঠিক নয়। ব্যায়ামের পর একটু বিশ্রাম নিয়ে তারপর পানি খেতে পারেন।
২. খাবারের মেন্যু থেকে যতটা সম্ভব মিষ্টি, কোমলপানীয়, ফাস্টফুড ইত্যাদি খাবার বাদ রাখাই ভালো। কারণ, এসব খাবার খেলে আপনার ব্যায়াম করা বৃথা হয়ে যাবে।
৩. নিজে অসুস্থ থাকলে ব্যায়াম করার দরকার নেই।
৪. বিশেষ করে, গর্ভকালীন চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনো ব্যায়াম করা উচিত নয়।
৫. ব্যায়ামের সঠিক সময়ের সঙ্গে খাওয়ার সময়ের সঠিক ভারসাম্য না থাকলে ব্যায়ামের সুফল পাওয়া যাবে না।
৬. সময় অনুযায়ী ব্যায়ামের ধরনও ভিন্ন, হবে সেক্ষেত্রে অবশ্যই রুটিন করে নিন।
৭. যদি কর্মব্যস্ততার কারণে সারাদিন কোনো ব্যায়ামই করা না হয় তাহলে সেটা আপনার শরীর ও মনের জন্য ভালো নয়। তাই ব্যায়াম একদমই না করার চেয়ে কিছু সময় করাটা অনেক ভালো।
ছাত্র: আপনার একেকটি দিন একেকটি মুহূর্তে পার হয়ে যায়। এখন থেকে ওখানে যাওয়া আসা, একাডেমিক এবং সামাজিক জীবন সবখানে তাল মেলানোর চেষ্টার মধ্যে সকালটা কাটে খুব তাড়াহুড়ায়। তাই সকালে ব্যাম্যামের জন্য সময় বের করতে হলে শেষমেশ আর করাই হবে না। অতএব ব্যায়ামের জন্য রাত আপনার আদর্শ সময়। এতে আপনি একটি দীর্ঘ দিনের শেষেও সময় করে নিয়মিত ব্যায়াম করতে পারবেন, যা আপনাকে স্ট্রেস রিলিফেও সাহায্য করবে।
কর্পোরেট: একজন বন্ধু খুঁজে নিন যে আপনাকে বিকাল বেলা অফিস শেষে সঙ্গ দিবে। জিম হোক বা হাঁটার জন্য হোক, বিকাল বেলাই আপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত সময়। টনিকের সদস্যতার মাধ্যমে বিভিন্ন জিমে ডিসকাউন্ট পেতে ডাউনলোড করুন টনিক অ্যাপ।
গৃহিনী: ব্যায়াম মনকে শান্ত করে, তাই এর মাধ্যমেই কি দিনটি শুরু করা ভালো না? সকাল বেলা ব্যায়াম দিয়ে দিন শুরু করে কাজে নেমে পড়ুন। এটি সারাদিনে আপনাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে সাহায্য করবে। রাতে সময়মত বিছানায় চলে যান, পর্যাপ্ত ঘুম আপনাকে সকালের ব্যায়ামের জন্য ফ্রেশ রাখবে।
দীর্ঘস্থায়ী অসুখধারী: ডায়াবেটিস, হাঁপানি, বাত ইত্যাদি দীর্ঘস্থায়ী রোগ থাকা মানে এই না যে আপনি ব্যায়াম করতে পারবেন না। কিন্তু আপনার ওষুধ খাওয়া আপনার ব্যায়ামের পরিমাণ এবং সময়সূচিকে প্রভাবিত করবে।
ব্যায়ামের কিছু সাধারণ নিয়মাবলী
অনেকেই বাসায় নিজে নিজে অথবা জিমে ব্যায়াম করেন। প্রতিটি কাজেরই সুনির্দিষ্ট নিয়ম আছে। খাওয়া দাওয়ার যেমন সঠিক নিয়ম আছে, তেমনি ব্যায়ামেরও অনেক নিয়ম কানুন আছে, যা জেনে বুঝে করা খুব দরকার। ব্যায়াম যদি ঠিক মত না করা হয়, তবে শারীরিক নানান রকম সমস্যা যেমন: মাসেল পুল, ইনজুরি, ইত্যাদি হতে পারে। জিমে যারা যান, তারা হয়ত সঠিক নির্দেশনা পান, কিন্তু যারা বাড়িতে ব্যায়াম করেন, তারা হয়ত না জেনে অনেক ভুল ভাবে ব্যায়াম করছেন।
নিচে আপনাদের জন্য ব্যায়ামের কিছু সাধারণ নিয়ম কানুন দেয়া হলো:
১. আপনি কেন ব্যায়াম করবেন সেটা আগে জানুন, প্রয়োজনে ডাক্তার অথবা জিম ট্রেইনারের কাছ থেকে জানুন কিভাবে, কত টুকু করবেন।
২. শারীরিক ক্ষমতা ও বয়স অনুযায়ী ব্যায়াম করবেন, যেমন : ৪০ বছর বয়সের ব্যাক্তি সব ধরনের ব্যায়াম করতে পারবেন না, ব্যাক পেইন, বাতের সমস্যা থাকলে সাবধানে ব্যায়াম করতে হবে। গর্ভবতী মহিলারাও সব ধরনের ব্যায়াম করতে পারবেন না।
৩. কোনো রকম শারীরিক সমস্যা না থাকলে, নিজেই ব্যায়াম শুরু করতে পারেন।
ব্যায়াম কি ভাবে শুরু করবেন?
৪. ব্যায়াম এর শুরুতেই আপনার ওজন, উচ্চতা ইত্যাদি লিখে রাখুন, কেমন উন্নতি হচ্ছে তা প্রতিমাসে খেয়াল করুন।
৫. ব্যায়ামের সময় আরামদায়ক পোশাক, যেমন: গেঞ্জি, কেডস পরাই ভালো। সাথে রাখবেন তোয়ালে, পানির বোতল।
৬. জুতা বা কেডস কার্ডিও ব্যায়ামের জন্য খুব দরকারী ও গুরুত্ব্যপূর্ণ। ভালো মানের কেডস না ব্যাবহার করলে পায়ে ব্যাথা, মাথা ব্যাথা এমনকি মেরুদন্ডে ব্যাথাও হতে পারে।
৭. অবশ্যই কার্ডিও করার সময় একটু পর পর এক চুমুক পানি খাবেন, এটি আপনাকে পানিশুন্যতা এর থেকে রক্ষা করবে|একবারে বেশি পানি খাবেন না, তাহলে সেই পানি সরাসরি আপনার ফুসফুসে চলে যাবে, water intoxication, hyponatremia (রক্তে সোডিয়াম-এর স্বল্পতা), appendicitis ও হতে পারে।
৮. ব্যায়ামের সময় পূর্ণ মনোযোগ ব্যায়াম করার দিকে থাকবে, বই পড়তে পড়তে ব্যায়াম করবেন না, এতে আপনার ব্যায়াম সঠিক হবে না।
৯. ব্যায়ামের সময় আপনার posture এর দিকে লক্ষ্য রাখুন, উল্টা পাল্টা posture এ ব্যায়ামের ফলে শারীরিক অসুবিধা বা আপনার দেহের গঠন নষ্ট হতে পারে।
১০. প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সময় ব্যায়াম করবেন।
১১. ব্যায়াম নিয়মিত করবেন। একদিন করলেন, আবার ১০ দিন পরে করলে, সেই ব্যায়াম কোনো কাজে আসবে না।
১২. ব্যায়াম করবেন একটি নির্দিষ্ট রুটিন অনুযায়ী। কোন দিন কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন, কত টুকু তা আগেই ঠিক করে নিন, সেটা মেনে চলুন।
১৩. ওয়ার্ম আপ আর কুল ডাউন ব্যায়ামের খুব গুরুত্ব্য পূর্ণ অংশ। যেমন: ওয়ার্ম আপ না করে আপনি যদি দৌড়ানো শুরু করেন, তাহলে আপনার হার্ট ফেইল হতে পারে। যদি ওয়ার্ম আপ না করে পেটের ব্যায়াম করেন, তাহলে কোনো লাভ নেই । আমার প্রিয় ট্রেইনার-এর মতে ওয়ার্ম আপ হচ্ছে ব্যায়ামের সবচাইতে গুরুত্ব্য পূর্ণ অংশ। ওয়ার্ম আপ বলতে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি, রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি , মাসেলের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ইত্যাদি বুঝায়। স্বাভাবিক অবস্থায় আমাদের শরীরের তাপমাত্রা যে অবস্থায় থাকে, সে অবস্হা থেকে তাপমাত্রা ও হার্ট রেট বাড়ানোকে ওয়ার্ম আপ বলা হয়। ওয়ার্ম আপ করবেন একদম শরীরচর্চার শুরুতে। প্রথমে ধীরে ধীরে হাটুন, দুই মিনিট পরে স্পিড বাড়ান, তারপর জগিং করুন। ৫ মিনিট হাটুন, তারপর ৫ মিনিট কমপক্ষে জগিং করুন। এভাবে আপনার শরীর যখন ঘামবে তখন বুঝবেন ওয়ার্ম আপ হয়েছে। তখন running, jogging, পেটের ব্যায়াম, stretching, weight training ইত্যাদি করা যাবে। কমপক্ষে ১০ মিনিট ওয়ার্ম আপ করলে ভালো।
১৪. আস্তে ধীরে কার্ডিও শুরু করুন |হঠাত করে স্পিড বাড়িয়ে দিবেন না। কার্ডিও করতে করতে হঠাত বন্ধ করে দিবেন না, কার্ডিও শেষে যাতে আপনার heart rate, body temperature নরমাল হয় তাই, আস্তে আস্তে কার্ডিও শেষে কুল ডাউন ও stretching করুন।
১৫. ব্যায়ামের ঠিক আগে, পরে কিছু খাবেন না, তাহলে সেটা হজম হবে না। ব্যায়ামের দুই ঘন্টা আগে এবং এক ঘন্টা পরে কিছু খাওয়া যাবে না।
১৬. ব্যায়াম করার সময় মাঝে মাঝে, অথবা যখন থামবেন, তখন শ্বাস নিবেন ও ছাড়বেন| এতে শ্বাস প্রশ্বাস স্বাভাবিক হয়|
১৭. মাঝে মাঝে ব্যায়ামের রুটিন পরিবর্তন করলে ভালো ফল পাবেন, কারণ এক ঘেয়ে নিয়মে আপনার শরীর অভ্যস্ত হলে, সেটা আর কাজে লাগবে না।
১৮. সম্ভব হলে নতুন ধরনের ব্যায়াম শুরু করতে পারেন, এতে আপনার ব্যায়ামের একঘেয়েমি কাটবে, নতুন ব্যায়াম শরীরে কাজেও লাগবে।
১৯. ব্যায়ামের সময় পুরা শরীর টিকে কাজে লাগান, যেমন: হাটার বা দৌড়ানোর সময় হাত দুটিকে কনুই ভেঙ্গে সামনে পেছনে নাড়ান। এতে আপনার ঘাড়, হাতের ও ব্যায়াম হবে।
২০. ব্যায়াম করতে করতে বেশি ক্লান্তি লাগলে অথবা খুব খারাপ লাগলে বন্ধ করে দিন| জোর করে করবেন না।
২১. মন খারাপ করে, ব্যায়াম করতে আলসেমি লাগে,ভালো লাগে না ইত্যাদি মানসিকতা নিয়ে ব্যায়াম করলে কোনো লাভ হবে না, আনন্দের সাথে মজা করে ব্যায়াম করুন।
২২. যারা weight training করেন, তারা কতটুকু weight নিবেন তা জেনে বুঝে করুন। posture ঠিক রেখে নিয়ে weight (dumbbell etc.)ব্যায়াম করুন। Weight training শুরু করবেন ব্যায়াম শুরু করার ১/২ সপ্তাহ পরে।
২৩. অতিরিক্ত সময় ধরে ( যেমন তিন, চার ঘন্টা) ব্যায়াম করবেন না, এতে হিতে বিপরীত হবে।
২৪. ব্যায়াম করার সময় ব্যাথা পেলে অথবা মাসেল পুল হলে সাথে সাথে ব্যায়াম বন্ধ করে দিন, ডাক্তার অথবা physiotherapist দেখান।
২৫. ঘুমানোর চার ঘন্টা আগে আর কার্ডিও ব্যায়াম না করাই ভালো| ঘুমানোর আগে যদি ব্যায়াম করতে হয়, তাহলে একমাত্র হালকা yoga করতে পারেন।
২৬. জিমের প্রতিটি machine ও instrument এর ব্যাবহারের সময় কিভাবে করবেন তা জেনে বুঝে করবেন। তা নাহলে মাসেল পুল ও ইনজুরি হতে পারে।
২৭. ব্যায়ামের শেষে shower নিলে ফ্রেশ লাগবে।
জগিং সম্পর্কে কিছু তথ্য
ভোরের চমত্কার আলো আর মুক্ত বাতাসে জগিং-এর জন্য আরামদায়ক। ঘুম ছেড়ে উঠে পড়া একটু কষ্টসাধ্য হলেও এর স্বাস্থ্যগুণ অনেক। ভোরের নির্মল বাতাসে হাঁটলে শরীরের সঙ্গে মন ও মস্তিষ্ক সতেজ হয়। চলুন জেনে নেওয়া যাক জগিং সম্পর্কে এ রকম কিছু তথ্য যা আপনাকে উদ্বুদ্ধ করবে নিয়মিত জগিং করতে।
নিয়মিত জগিং ওজন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। হাঁড় ও মাংসপেশী শক্তিশালী করে, শরীরের রক্ত সঞ্চালন বাড়ায়, রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে, হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়, ফুসফুসের কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে। নিয়মিত ব্যায়ামে শরীরের এনডোরফিন নামক হরমোন নি:সরণ বাড়ায় যা শরীরের ব্যথা কমায়, মনকে সতেজ করে, মুখের রুচি বাড়ায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। তাই বাতের সমস্যায় আক্রান্ত রোগীদের জন্য জগিং অনেক উপকারী।
এছাড়া জগিং বিষণ্নতা, স্নায়ুবিক দুর্বলতা কাটাতে সাহায্য করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে বলে সৌন্দর্য বর্ধন ও দ্রুত বার্ধক্য রোধে জগিং অতুলনীয়। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির মতে, সপ্তাহে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট করে জগিং করলে ফুসফুস, খাদ্যনালী, স্তন, প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পায়। তাই আর সময় নষ্ট না করে আজ থেকেই নিয়মিত জগিং করার অভ্যাস তৈরি করুন ও শরীর সুস্থ রাখুন।
কমেন্টস করুন