কোন রোগে কোন চিকিৎসক?
পেটে ব্যথা আর পায়ের ব্যথার চিকিৎসক আলাদা। কোন রোগের জন্য কোন চিকিৎসকের কাছে যাওয়া দরকার, সেটা বুঝে উঠতে অনেক সময় হিমশিম খেতে হয়। দেখা যায়, অনেকেই এক রোগের জন্য তিনজন চিকিৎসক দেখাচ্ছেন। তবে পাচ্ছেন, সঠিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের খোঁজ। মাঝে সময় আর অর্থের অপচয় হচ্ছে।
একেক রোগের একেক উপসর্গ থাকে। উপসর্গ শুনেই রোগটা কী, তা প্রাথমিকভাবে ধারণা করতে পারেন চিকিৎসকেরা। রোগী অনেক সময় সেটি নাও বুঝতে পারেন।
বিভিন্ন দেশে নিয়ম হচ্ছে অসুখ হলে প্রথমেই সাধারণ চিকিৎসকের (জেনারেল ফিজিশিয়ান) পরামর্শ নেওয়া। তিনি ভালোভাবে উপসর্গ দেখে সেই রোগের বিশেষজ্ঞের কাছে পাঠান। আমাদের দেশে এই নিয়মের চর্চা সেভাবে নেই বললেই চলে।
রোগী চাইলেই যেকোনো চিকিৎসক দেখাতে পারেন আমাদের দেশে। দেশে জনগণের তুলনায় বিশেষজ্ঞের সংখ্যা কম। তাই স্বাভাবিকভাবেই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা বাড়তি চাপের মধ্যে পড়েন। তাঁদের সিরিয়াল পেতে দেরি হয়। ভোগান্তিতে পড়েন রোগী।
ধরা যাক, কারও ডায়রিয়া হয়েছে। এ ক্ষেত্রে প্রথমে একজন জেনারেল ফিজিশিয়ানের (জিপি) কাছে যাওয়া দরকার। তিনি উপসর্গ বিবেচনা করে প্রাথমিক ওষুধপথ্য দেবেন। প্রয়োজনে স্যালাইন দেবেন অথবা কোনো পরীক্ষা দেবেন। এরপর ওই চিকিৎসক যদি মনে করেন পরিপাকতন্ত্র বিশেষজ্ঞ দেখানো দরকার, তাহলে রোগীকে সেখানে পাঠাতে পারেন।
বেশির ভাগ ক্ষেত্রে খুঁটিনাটি বিষয়ে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ প্রায় দরকার পড়ে না। সরাসরি বিশেষজ্ঞ দেখাতে গিয়ে অনেক সময় ভুল চিকিৎসক দেখানোর আশঙ্কা থাকে। যেমন কারও রাতের বেলা শ্বাসকষ্ট বা কাশি হচ্ছে। এর কারণ হতে পারে হাঁপানি বা ব্রংকাইটিস। হৃদ্রোগের কারণেও এমন হতে পারে। রোগী এখন বক্ষব্যাধির বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন, না হৃদ্রোগ বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন? একজন জেনারেল ফিজিশিয়ান উপসর্গ শুনে বুকে একটা স্টেথিসকোপ লাগিয়ে বলে দিতে পারেন, কার কাছে যাওয়া উচিত। হাসপাতালের জরুরি বিভাগ বা বহির্বিভাগে গেলেও প্রাথমিক পরামর্শ পাওয়া যেতে পারে।
তবে কিছু ব্যতিক্রমও আছে। রোগী যদি শিশু হয়, তবে তার যেকোনো সমস্যায় শিশু বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। কারণ, শিশুদের ওষুধের মাত্রা ভিন্ন হয়। রোগের উপসর্গও অনেক সময় বড়দের মতো হয় না। আবার কেউ যদি অন্তঃসত্ত্বা হন, তিনিও সরাসরি স্ত্রীরোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞের কাছে যেতে পারেন। ক্রনিক বা দীর্ঘমেয়াদি রোগেরÿক্ষেত্রে, যেমন: আপনি যদি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, হৃদ্রোগ, বাতরোগে আগে থেকেই ভোগেন, তাহলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে থাকতে পারেন। ক্রনিক রোগেরÿক্ষেত্রে একজন চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানেই থাকা ভালো। কারণ, ওই চিকিৎসক রোগীর সব ইতিহাস জানেন। রোগীর কোন ওষুধে ভালো কাজ হয়, কোনটাতে অ্যালার্জি আছে, আগে কখন কী জটিলতা হয়েছিল, এসব বিষয় চিকিৎসক জানেন। রোগীর যদি পরিচিত পারিবারিক চিকিৎসক থাকেন, তাহলে তিনিই বলে দেবেন, কোন সমস্যায় কার কাছে যাওয়া দরকার।
কিছু কিছু উপসর্গ থাকে, যেগুলোর জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা দরকার। এসব বিষয়ে কখনোই বিশেষজ্ঞের সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষা করা যাবে না। যেমন বুকে ব্যথা হলে দ্রুত যেতে হবে হৃদ্রোগের চিকিৎসা হয় এমন হাসপাতালে। সরাসরি জরুরি বিভাগে দেখা করাই ভালো। হঠাৎ শ্বাসকষ্ট, জ্বরের সঙ্গে খিঁচুনি, ভুল বা অসংলগ্ন কথাবার্তা, হঠাৎ জ্ঞান হারানো, কোনো অঙ্গ অবশ হয়ে পড়া, প্রচুর বমি বা ডায়রিয়া, আঘাত পাওয়া বা হাড় ভাঙা, বমি, মল বা কাশির সঙ্গে রক্তপাত, প্রচণ্ড পেটব্যথা, বিষক্রিয়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে হাসপাতালের জরুরি বিভাগের শরণাপন্ন হতে হবে। এসব ক্ষেত্রে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু হয়ে যাওয়াটা জরুরি। পরে বিশেষজ্ঞের কাছে যাওয়া যেতে পারে। সংশ্লিষ্ট হাসপাতালেরই দায়িত্ব বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দেখানো। [১]
কেন ডাক্তার দেখাবো
পেটে মাঝেমধ্যে চিনচিন ব্যথা হয়। পেটের ডাক্তার দেখাবেন, না সার্জন? কোমরে ব্যথা—হাড় জোড়া বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন, নাকি বাতব্যথা বিশেষজ্ঞের কাছে। নাকি ফিজিক্যাল মেডিসিনে ভালো হবে? ছোট থেকে বড় নানা সমস্যায় আমরা এ রকম দ্বিধাদ্বন্দ্বে পড়ি। সমস্যার কতটা গুরুত্ব, ডাক্তারের কাছে যাবেন কি না, আর গেলেই বা কোন বিশেষজ্ঞের কাছে—এ নিয়েই দ্বন্দ্ব।
আকস্মিক কোন সমস্যায় কী করবেন, সে সম্পর্কে একটু ধারণা রাখা ভালো। সে জন্য কয়েকটি পরামর্শ:
১. শিশুদের যেকোনো সমস্যায় প্রথমে শিশু বিশেষজ্ঞের কাছেই নিয়ে যাবেন। তিনিই বুঝতে পারবেন, শল্যচিকিৎসা দরকার, নাকি অন্য কিছু। প্রাথমিক পরীক্ষা-নিরীক্ষাও তিনিই করে ফেলতে পারবেন। এতে আরও স্পষ্ট হবে কোন বিশেষজ্ঞ দরকার। শিশুর যেকোনো সমস্যায় পরামর্শের জন্য বাড়ির কাছেই একজন শিশুদের ডাক্তারের সঙ্গে সব সময় যোগাযোগ রাখুন, যিনি শিশুটির আদ্যোপান্ত জানেন।
২. প্রচণ্ড পেটব্যথা, বুকে ব্যথা, হঠাৎ অচেতন হয়ে পড়া, প্রচুর বমি বা ডায়রিয়া, অনেক বেশি জ্বর, অসংলগ্ন আচরণ বা কথাবার্তা, রক্তক্ষরণ, কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত জিনিস গিলে ফেলা, দুর্ঘটনা—এগুলো হচ্ছে জরুরি অবস্থা বা ইমার্জেন্সি। এসব ক্ষেত্রে কখনোই কোনো ডাক্তারের চেম্বারে সিরিয়াল না দিয়ে সরাসরি যেকোনো হাসপাতালের (বাড়ির কাছে) জরুরি বিভাগে যোগাযোগ করবেন।
৩. শারীরিক সমস্যা বা অসুস্থতায় যার-তার পরামর্শ না নিয়ে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই ভালো। তিনি যেকোনো চিকিৎসক (জেনারেল ফিজিশিয়ান) হতে পারেন।
৪. সমস্যা যত ছোটই হোক, দোকানির পরামর্শে কখনোই ওষুধ কিনে খাবেন না। উল্টোপাল্টা চিকিৎসা না নেওয়াই ভালো। [২]
শরীরে এরকম কোন লক্ষণ আছে? তাড়াতাড়ি যান ডাক্তারের কাছে।
অপ্রশমনীয় (না মেটা)তৃষ্ণা
অত্যধিক তৃষ্ণা (পলিডিপসিয়াও বলা হয়) এবং অতিরিক্ত প্রস্রাব করা (পলিউরিয়ায়ও নামে পরিচিত) ক্লাসিক ডায়াবেটিসের উপসর্গ। এই লক্ষণগুলি থাকলে তৎক্ষণাত ডাক্তারের কাছে যান। আপনার ডায়াবেটিস থাকলে,আপনার রক্তে অতিরিক্ত গ্লুকোজ(glucose)তৈরি হয়। আপনার কিডনি অতিরিক্ত গ্লুকোজ(glucose) পরিশোধন এবং শোষণ করার জন্য অতিরিক্ত কাজ করতে বাধ্য হয়। তার ফলে আপনার শরীরে ডিহাইড্রেশন(dehydration) তৈরী হয়।
হাত, পা শির শির করা বা টন টন করা বা ঝন ঝন করা
ডায়াবেটিসের ফলে নার্ভের ক্ষতি হয়, তার ফলে হাতে এবং পায়ে শির শির করা বা টন টন করা বা ঝন ঝন করা অথবা যন্ত্রণা শুরু হয়। এটি ডায়াবেটিসের প্রাথমিক লক্ষণ। ডায়াবেটিস বাড়ার সাথে সাথে এই উপসর্গটি বার বার হতে থাকে। এই লক্ষণটি থাকলে ডাক্তারের কাছে যান এবং চিকিৎসা করুন।
চুলকানি
চামড়ায় চুলকানি অনেকসময় বড় ব্যাধির একটি একটি উপসর্গ। দীর্ঘদিন যাবৎ চুলকানি হয়ে থাকলে সেটি ডারমাটাইটিস, সোরিওসিসের লক্ষণ হতে পারে। অনেকদিন হয়ে গেলে সেক্ষেত্রে রোগটি ভালো হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে।
তাই শরীরে চুলকানি দেখা দিলে শীঘ্রই ডাক্তার দেখান, তানাহলে এর চিকিৎসা যথেষ্ট খরচ সাপেক্ষ। চামড়ার রোগ অনেক সময় যকৃৎ রোগ(liver disease) বা ক্যান্সার(cancer) যেমন লিউকেমিয়া(leukemia) অথবা লিম্ফোমা(lymphoma) রোগের উপসর্গ হতে পারে।
ফোলা গোড়ালি
পা এবং গোড়ালি ফুলে যাওয়া অনেক সম্ভাব্য কারণ আছে। যেমন: অতিরিক্ত ওজন। অতিরিক্ত শরীরের ওজন রক্ত সঞ্চালন হ্রাস করতে পারে, যার ফলে পায়ের পাতা, গোড়ালিতে তরল জমা হয়।
গোড়ালি ফোলা কিডনির কার্যকারিতা কমতে থাকার অথবা কিডনি ফেইলিওর (Kidney Failure) এর একটি বিশেষ লক্ষণ। কিডনির কার্যকারিতা কমে গেলে শরীরে সোডিয়াম জমতে শুরু করে তার ফলে গোড়ালি এবং পায়ের পাতা ফোলে।
তাই গোড়ালি ফুলতে দেখলে তাড়াতাড়ি ডাক্তার দেখান।
ঘন ঘন প্রস্বাব
ডায়াবেটিস রোগে ঘন ঘন প্রস্রাব হয় এবং অস্বাভাবিকভাবে বৃহৎ পরিমাণে হয়। এটি উভয় টাইপ 1 এবং টাইপ 2 ডায়াবেটিস একটি প্রাথমিক উপসর্গ। রক্তের অতিরিক্ত গ্লুকোজ প্রস্রাবের মাধ্যমে বেরিয়ে যায়।
এছাড়াও আরও অনেক কারণ আছে যেমন প্রস্টেটের সমস্যায়, গর্ভাবস্থায় প্রভৃতি। তাই এই সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
জিহ্বায় ঘা
জিহ্বায় একটি ছোটখাটো সংক্রমণ অসাধারণ নয়। ছোট ছোট দানা যা বেশ বেদনাদায়ক। গরম খাবার থেকে কামড় বা জ্বালা থেকে জিহ্বার উপর বা তার নিচে ব্যাথা অন্য একটি সাধারণ কারণ। কিন্তু এছাড়াও জিহ্বায় ঘা ভিটামিন B12 এর ঘাটতির উপসর্গ যার ফলে রক্তাল্পতার সৃষ্টি হয়। ভঙ্গুর নখ ভিটামিন B12 এর ঘাটতির উপসর্গ। জিহ্বায় ঘা অনেকদিন ধরে হতে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।
চোয়ালের ক্ষত
চোয়াল আমাদের হার্টের খুব কাছের। অনেক সময় বুকে ব্যাথা না হয়ে হঠাৎ চোয়াল ব্যাথা হওয়া হার্ট ব্লকের লক্ষণ। নিঃশ্বাসের সমস্যা, বুকের চারপাশে ব্যাথা হওয়া হার্টের রোগের লক্ষণ। এরূপ হলে তৎক্ষণাত ডাক্তারের নিকট যাওয়া উচিৎ।
ডাক্তারের কাছে যাওয়া
১. অদ্ভুত উপসর্গগুলোর তালিকা তৈরি করে নিন
নিজের রোগের উপসর্গ ও আনুষঙ্গিক বিষয়ের লিখিত তালিকা তৈরি করা শুধু ডাক্তারের জন্যই না রোগীর জন্যেও অনেক উপকারী। আপনি হয়ত আপনার রোগ সম্পর্কিত এমন অনেক কিছুই ডাক্তারকে জানাতে চান কিন্তু কথা বলার সময় সব কিছু মনে রাখতে পারেন না। সেক্ষেত্রে উপসর্গগুলো আগেই লিখে নিয়ে যাওয়া উচিত।
২. সংকোচের কারণে কোনো সমস্যা বা উপসর্গের কথা এড়িয়ে যাবেন না
সংকোচ করে যদি রোগের কোনো উপসর্গ ডাক্তারের কাছে লুকান তবে তা আপনার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। যেমন ধূমপান, মদ্যপান এর অভ্যাস বা ব্যক্তিগত অস্বস্তিকর কোনো সমস্যার কথা ডাক্তারের কাছে লুকানো উচিত নয়।
মনে রাখবেন অসুস্থ ব্যক্তির পিতামাতার চিকিৎসার ইতিহাসও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। এই রেকর্ড রোগীর সময় ও টাকা বাঁচাতে পারে। এতে তার পরবর্তী অনুসন্ধানকে এড়িয়ে যাওয়া যায়।
৩. অ্যালার্জি বা পূর্ববর্তী চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের তথ্য
আপনার যদি অ্যালার্জির সমস্যা থাকে তাহলে পূর্ববর্তী চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধের তালিকা জানা থাকা সবসময় উপকারী। বিশেষ করে এক অঞ্চল থেকে আরেক অঞ্চলে বা এক দেশ থেকে আরেক দেশে গেলে। এতে রোগীর টাকা ও সময় বাঁচার পাশাপাশি দ্রুত চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করে।
৪. সাম্প্রতিক শারিরীক পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ জরুরি
বর্তমানে অনেকেই নিজের রক্তের চিনির মাত্রা ও থাইরয়েডের মাত্রার টেস্ট করিয়ে নিজেই আপডেট থাকেন। যখন আপনি ভিন্ন কোনো কারণে বা রোগের জন্য চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন তখন আপনি আপনার সাম্প্রতিক টেস্টের রিপোর্ট ও চিকিৎসককে দেখাবেন। এটি আপনাকে ঔষধের পরামর্শ দিতে চিকিৎসককে সাহায্য করবে।
৫. জীবনযাপনের অভ্যাস ও হারবাল ঔষধ গ্রহণের তথ্য জানানো
আমরা জানি জীবনযাপন প্রণালি চিকিৎসার উপর প্রভাব ফেলে। সাধারণ কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা যেমন- ইমিউনিটি বৃদ্ধি করা, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা মোকাবেলা বা এসিডিটির সমস্যা দূর করার জন্য অনেকেই ভেষজ উপাদান গ্রহণ করে থাকেন। এগুলোর তথ্য এবং আপনি কতক্ষণ কম্পিউটারের সামনে বসে থাকেন বা দিনে কতক্ষণ ড্রাইভিং করেন তাও আপনার চিকিৎসককে জানানো উচিৎ। এতে করে ডাক্তার সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে সমস্যায় পড়বেন না। [৩]
যেভাবে রোগীকে রাজি করাবেন ডাক্তারের কাছে যেতে
আমাদের দেশের অধিকাংশ মানুষের একটি বড় সমস্যা হলো তারা সহজে ডাক্তারের কাছে যেতে চায় না। বিশেষ করে একটু বয়ষ্করা ডাক্তারের কাছে একেবারেই যেতে চায় না। সমস্যা যখন অনেক বেশি হয়ে যায় তখন ডাক্তারের কাছে যাওয়ার কথা ভাবে তারা। এর আগে ঘরোটা টোটকা চিকিৎসাতেই ভালো হওয়ার চেষ্টা করে বেশিরভাগ মানুষ। কিংবা অনেকেই আবার কবিরাজ, ঝারফুক, তাবিজ, পানি পড়ার মতো কুসংস্কারের আশ্রয়ও নিয়ে থাকে যা একেবারেই উচিত না। পরিবারের কাউকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে নিশ্চয়ই আপনাকেও হিমশিম খেতে হয়েছে? আপনি যদি এমন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়ে থাকেন তাহলে জেনে নিন এই সমস্যা সমাধানের কিছু সহজ উপায় সম্পর্কে।
অসুখের শুরু থেকেই বলতে শুরু করুন
আমরা সাধারণত কেউ অসুস্থ হলে তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে বলি তখনই যখন অসুস্থতাটা অনেক বেশি বেড়ে যায়। আপনি কমপক্ষে ৫/৬ বার বলার পরে আপনার প্রিয়জন হয়তো রাজি হয় ডাক্তারের কাছে যেতে। কিন্তু ততক্ষণে অনেক সময় অনেক দেরি হয়ে যায়। তাই একটু আগে থেকেই বলা শুরু করুন তাদেরকে। তাহলে সময়মত তারা ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি হলেও হতে পারে।
কিছুটা ভয় দেখান
রোগীকে যদিও ভয় দেখানো উচিত না, কিন্তু এই ক্ষেত্রে কিছুটা ভয় দেখাতে হবে। ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি না হলে তাকে বুঝিয়ে বলুন যে অসুস্থতা বেড়ে গেলে হয়তো পরবর্তিতে চিকিৎসা করিয়েও লাভ হবে না। তাই সময় থাকতেই ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত।
তার মন গলিয়ে ফেলুন
রোগীকে বলুন তার অসুস্থতা পরিবারের সবাইকে ভাবিয়ে তুলছে। রোগীকে এটাও বলুন যে পরিবারের সবার কথা একটিবারের জন্য ভেবে হলেও তাকে ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে। পরিবারের সবাই তাকে কতটা ভালোবাসে এবং তার জন্য দুশ্চিন্তা করে সেটা তাকে জানিয়ে দিন।
সন্তানের অজুহাত দিন
সন্তান মানুষের জীবনের সবচাইতে দূর্বল একটি অংশ। আর তাই সন্তানের অজুহাত দিলে সাধারণত রোগীরা ডাক্তারের কাছে গিয়ে দ্রুত সুস্থ হওয়ার কথা ভাবে। তাই রোগীকে বলুন সন্তানের ভবিষ্যতের কথা ভেবে হলেও তাকে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে।
বন্ধুদের সহায়তা নিন
অনেক সময় রোগী পরিবারের কথা আমলে না নিলেও বন্ধুদের কথার বেশ গুরুত্ব দেয়। তাই বন্ধুদের সহায়তা নিন। রোগীর বন্ধুদেরকে বলুন তাকে একটু বুঝিয়ে শুনিয়ে ডাক্তারের কাছে যেতে রাজি করাতে। [৪]
মনে রাখুন
১. কর্তব্যরত স্টাফ দের সাথে ভালো ব্যবহার করুন যা আপনার সুচিকিৎসা নিশ্চিত করবে।
২. ডাক্তারের সাথে কথা বলার সময় প্রাসঙ্গিকতা যোক্তিকতা ও সুনির্দিষ্টতা বজায় রাখুন।
৩. আপনার বর্তমান রোগ সম্পর্কে ধারণা দিতে ভুলবেন না যেমন ডায়বেটিস, প্রেশার ইত্যাদি।
৪. পূর্ববর্তী পরীক্ষানিরীক্ষার কাগজপত্র ও প্রেসক্রিপশন অবশ্যই সঙ্গে আনবেন।
৫. রোগ এর বৃত্তান্ত ও সম্ভাব্য সকল চিকিৎসা পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নিতে ভুলবেন না।
৬. সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করা ডাক্তার ও রোগী দুজনের ই কর্তব্য।
৭. তো বন্ধুরা আজ এ পর্যন্তই আমাদের চ্যানেলটি কে সাবস্ক্রাইব করতে ভুলবেন না।
[১] অনলাইন ডেস্ক
[২] অধ্যাপক ডা. খাজা নাজিমুদ্দিন
[৩] দ্য হেলথ সাইট
[৪] অনলাইন ডেস্ক
কমেন্টস করুন